শোভনলাল রাহা, নৈহাটি
জেটিয়ায় ত্রিকোণ প্রেমের জেরে মারধর কাণ্ডে ভাইরাল ভিডিওর সূত্র ধরে রবিবার রাতে আগ্নেয়াস্ত্র সহ পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দু’জন। ধৃতদের নাম শুভ্রনীল কিস্কু (২৩) ও জিৎ সরকার (২৫)। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়। বিচারক চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ব্যারাকপুর নর্থ জোনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার গণেশ বিশ্বাস।
গত ২৭ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার জেটিয়া থানা এলাকায় সন্দীপ ঘোষ নামে এক যুবককে মদের আসরে মারধরের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে শুভ্রনীল ও জিৎকে গ্রেফতারও করে জেটিয়া থানার পুলিশ। কিন্তু জামিনে ছাড়া পেয়ে যান দুই অভিযুক্ত। এর মধ্যেই শনিবার সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। রবিবার সেই ভিডিয়ো নজরে আসে জেটিয়া থানার তদন্তকারী অফিসারের। ভিডিয়োতে দেখা যায়, সন্দীপকে নৃশংস ভাবে মারধর করা হচ্ছে। তাঁর কপাল ফেটে রক্ত ঝরছে। বারবার দুই বন্ধু “অভি” ওরফে জিৎ এবং “কিস্কু” (শুভ্রনীল)-র পা জড়িয়ে ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাইছেন সন্দীপ। কিন্তু ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অত্যাচার, মারধর। সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। এমনকী, সন্দীপের গায়ে মূত্র ত্যাগ করতেও দেখা যায় এক অভিযুক্তকে। মারধরের সময় এক অভিযুক্তকে বলতে শোনা যায়, “তোকে এখানেই ঠুকে দেব”। সূত্রের খবর, এর থেকেই তদন্তকারী অফিসারের সন্দেহ হয় যে, অভিযুক্তদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকতে পারে। এরপরই ফের তৎপর হয়ে অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। রাতেই অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে আটক করা হয়। সূত্রের খবর, জেরায় ধৃতরা স্বীকার করে নেন, তাঁদের কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এবং ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে পাল্লাদহ এলাকায় তাঁদের বাড়ির পাশে গোপন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় একটি আগ্নেয়াস্ত্রও। এরপরই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল, আরও আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ অন্য কোথাও লুকোনো রয়েছে কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে সোমবার আদালতে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। সেই আবেদনে সাড়া দেয় আদালত। আপাতত ধৃতদের বিরুদ্ধে ২৫ আর্মস অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়েছে। পরবর্তীতে সন্দীপকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় আর কোনও ধারা যুক্ত হয় কি না, সেদিকেই নজর সকলের।

